ঝালকাঠি প্রতিনিধি ॥ ঝালকাঠি নলছিটি উপজেলার মগড় ইউনিয়নের মগড় ৬নং ওয়ার্ডে একতরফা সালিশ বৈঠকের অভিযোগ স্থানীয় ইউপি সদস্য ও মাতবরদের বিরুদ্ধে। আপস মীমাংসা করতে হলেও নির্দিষ্ট কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। ভূক্তভোগী অসহায় সৈয়দা নুসরাত হক বলেন, আদালতে জমি-জমার ভাগবন্টন নিয়ে আমি বাটোয়ারা মামলা করেছি যাহার নাম্বার (০২ নল) উক্ত মামলা চলাকালীন অবস্থায় একতরফা সালিশ বৈঠকে বসেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য জসিম,ইউপি সদস্য আল-আমিনসহ ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মোবারক হোসেন। মগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক শাহীনের নেতৃত্বে এই একতরফা সালিশির পাঁয়তারা করছে। বর্তমান দেওয়ানি আইনে এই আপস মীমাংসার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে দুই পক্ষ আদালতে হাজির হওয়ার পরে আদালতের অনুমতিক্রমে আপস মীমাংসার মাধ্যমে বিরোধটি মিটিয়ে ফেলার বিধান আছে। আমাকে কোন নোটিস না দিয়ে,একতরফা আপস মিমাংশার জন্য সালিশ বৈঠক করে রোয়েদাদ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমার স্বামী জামাল খান অসুস্থ হওয়ায় আমি একজন অসহায় নারী মেম্বর চেয়ারম্যান ও স্থানীয়দের ধারে ধারে ঘুরেছি। কিন্তু আমার কথা আমলে না নেওয়ায় আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আমার শ্বশুর আমজেদ আলী খানের ৩ মেয়ে ও ৪ জন ছেলেরা ওয়ারিশ। এদের মধ্যে এক মেয়ে হাসিনার অংশ বিক্রি করেছে এবং মৃত সেন্টু খানের অংশ অর্থাৎ সোহাগের বাবার অংশ বিক্রি করেছে। অসহায় নারী সৈয়দা নুসরাত হক আরো জানায়, আমার স্বামীর একভাই পাগল ছিলও। তিনি গত ২০১৭ইং সালে মৃত্যুবরণ করেন, তার নাম নূরুল ইসলাম খান। তিনি জীবীত থাকা অবস্থায় তখন পাগলের সেবাযত্ন বা দেখাশোনা কে করবে। ঐ সময় আত্মীয় স্বজনরা পাগলের দেখাশোনার দায়িত্ব কেউ নিতে চায়নি। আমি রাজি হলাম এবং পাগলের অংশের জমি আত্মীয় স্বজনরা সবাই মিলে আমাকে রোয়েদাদ নামায় লিখিত করে দিয়েছে। দীর্ঘ ৩২ বছর আমি পাগল ভাসুর নুরূল ইসলাম খানকে লালন পালন করেছি। রাস্তায় রাস্তায় গিয়ে খুঁজে এনে বাড়িতে রেখেছি। এতো বছর পর সেই পাগলের জমি টুকু খাওয়ার জন্য শাহ আলম খানের ছেলে ডুবাই প্রবাসী আদম ব্যবসায়ী ফারুক খান কালো টাকায় কোটিপতি বনে গেছে। সেই অবৈধ টাকার জোরে স্থানীয় মেম্বার চেয়ারম্যান ও মাতবরদের টাকা দিয়ে পাগলের জমি খাওয়ার জন্য এই অবৈধ একতরফা সালিশ বৈঠকের পাঁয়তারা করছে। জসিম মেম্বর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হওয়ায় আইনকানুনের কোন তোয়াক্কা করছে না। কথায় কথায় বলে ফেলে নলছিটি থানা পুলিশ তার পকেটে। আমি নলছিটি থানায় অনেক বার গিয়েছি তারা আমাকে চেনেন। কিন্তু আদালতে ভাগবাটোয়ারার স্বত্বের মামলা চলমান থাকলেও মেম্বর চেয়ারম্যানরা আদালতের অনুমতি না নিয়ে এমনকি আমাকে না জানিয়ে কি করে একতরফা আপস মিমাংশা করে। শাহ আলম খানের বাড়িতে এলাকার বখাটে ছেলেদের সাথে নিয়ে ও আমার বাড়ির নাসির যে,একবার আমাকে মেরে হাতের আঙ্গুল ভেঙ্গে দিয়েছিলো সেই নাসিরসহ ১৫/২০ জন সন্ত্রাসীদের পিকনিকের নাম করে কোরমা-পোলাও খাওয়াইতেছে। আমাকে শায়েস্তা করার জন্য শাহ আলম খানের বাড়িতে সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চলছে আনন্দ র্ফুতির মহোৎসব। তিনি আরো বলেন,আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আইন সকলের জন্য সমান। তাই আদালতে ভাগ-বণ্টনের জন্য মামলা করেছি। মামলা চলাকালীন এই জমির উপর একতরফা সালিশ মিমাংশা করার একতিয়ার কারো নেই। এ ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থা,ঝালকাঠি প্রেস ক্লাব,ঝালকাঠি পুলিশ সুপার,জেলা জজ,জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতিসহ আমাদের অভিভাবক ঝালকাঠি-২ আসনের এমপি আমির হোসেন আমু ভাইয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য জসিম জানান,আমরা উভয় পক্ষকে বৈঠকে বসে ডেকেছি। এক পক্ষ আসেনাই। আগামী বৈঠকে তারা আসলে আমরা সালিশি করব। আর না আসলে সালিশি করবো না। কারণ আমরা জনপ্রতিনিধি আমাদের কাছে সবাই সমান। একতরফা সালিশি করবোনা। এ ব্যাপারে নলছিটি মগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক শাহীন জানান, শাহ আলম খান ও সৈয়দা নুসরাত হক এদের জমি-জমার মিমাংশার জন্য একটি পক্ষ আমার কাছে এসেছিলও আমি দুইজন মেম্বর কে দায়িত্ব দিয়েছি। উভয় পক্ষকে নিয়ে মিমাংশা করে দেওয়ার জন্য। তারা এক পক্ষকে বাদ দিয়ে সালিশি করলে সেটা একতরফা হয়ে যাবে। আমার নলেজে আসছে আমি তাদের নিষেধ করে দিবো।
Leave a Reply